নানা ক্ষতিকর উপাদানের কারনে প্লাস্টিককে পরিবেশ তথা জীবনচক্রের জন্য অন্যতম হুমকি হিসেবে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংস্থা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছে। সমুদ্রের প্রানীদের জীবন নাশের কারন হিসেবে প্লাস্টিকের নাম বরাবর উঠে এসেছে।
প্লাস্টিকের অনেক ধরণের ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে “ওয়ান-টাইম” প্লাস্টিকের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। সহজেই বহন করা যায় এবং ফেলে দেয়া যায় বিধায় এই ধরণের প্লাস্টিক আইটেমের চাহিদার কারনে উৎপাদন গত কয়েক দশক থেকে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
এক পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে প্রতি মিনিটে এক মিলিয়ন প্লাস্টিকের বোতল কেনা হয়। এছাড়া, ১০ লাখ প্লাস্টিক ব্যাগ একবার ব্যবহার করে এলে দেয়া হয়। ফলে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী পাঁচ ট্রিলিয়ন পর্যন্ত প্লাস্টিকের বর্জ্য জমা হয়।
প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার না করে “ওয়ান-টাইম” প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ার কারনে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ বিশ্বব্যাপী এতটাই বেড়েছে যে তা সামাল দেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন আমরা একটা প্লাস্টিক বোতল বার বার ব্যবহার করতাম, কিন্তু এখন আমরা একবারের বেশি প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার তো করিই না বরং খোলা রাস্তা বা পুকুরে তা ফেলে দিচ্ছি।
এটা না ভেবেই যে এই প্লাস্টিক প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য কতটা ক্ষতিকর। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশ প্লাস্টিক দিয়ে আবর্জনার স্তুপ বানাচ্ছি এবং এই বর্জ্য সামলাতে প্লাস্টিক পুরিয়ে পুনরায় বাতাসে ছড়াচ্ছি বিষ।
কেন প্লাস্টিক পরিবেশ বান্ধব নয়, বা কেন প্লাস্টিক পুড়িয়ে ফেললেও তা আমাদের জন্য সমান ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এই বিষয় জানার আগে চলুন জেনে নেই প্লাস্টিক কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি –
প্লাস্টিক কি দিয়ে তৈরি? প্লাস্টিকের উপাদান সম্পর্কে জানুন
প্লাস্টিক মূলত বিভিন্ন জৈব পলিমার, যেমন পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC), পলিথিন, নাইলন ইত্যাদি থেকে তৈরি একটি সিন্থেটিক উপাদান। এই পলিমারগুলির একটি বড় অনুপাতের মধ্যে রয়েছে কার্বন পরমাণুর চেইন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন বা সালফার। প্লাস্টিক গলিত আকারে থাকা অবস্থায়ও বিভিন্ন আকার এবং আকারে ঢালাই করা যায়, যা পরবর্তিতে কঠিন আকারে রূপান্তরিত হয়।
সাধারণ প্লাস্টিকের উদাহরণ –
- পলিথিন (PE): সাধারণত ব্যাগ এবং বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
- পলিকার্বনেট (PC): নিরাপত্তা জানালা এবং চশমায় ব্যবহৃত হয়।
- পলিপ্রোপিলিন (PP): বোতল ক্যাপ এবং খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত হয়।
- পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC): পাইপ এবং নির্মাণ সামগ্রীতে ব্যবহৃত হয়।
- পলিইথিলিন টেরেফথালেট (PET): পানীয় বোতল এবং খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত হয়
প্লাস্টিকের উৎসঃ জীবাশ্ম জ্বালানি এবং জৈব উপাদান
প্লাস্টিকের উপাদানগুলি প্রধানত দুটি উৎস থেকে আসে: জীবাশ্ম জ্বালানি এবং জৈব উপাদান।
-
জীবাশ্ম জ্বালানি
বিশেষ করে দৈনন্দিন ব্যবহৃত বেশিরভাগ প্লাস্টিক পণ্য অপরিশোধিত তেল বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে উৎপাদিত হয়। এই উপাদানগুলি পেট্রো-ভিত্তিক পলিমার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের মূল ভিত্তি। উদাহরণস্বরূপ, পলিথিলিন এবং পলিপ্রোপিলিন সাধারণ প্লাস্টিকের মধ্যে অন্যতম, যা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি হয়।
-
জৈব উপাদান
জৈব প্লাস্টিক, নবায়নযোগ্য জৈব উপাদান থেকে তৈরি হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত –
- উদ্ভিজ্জ তেল ও স্নেহ পদার্থ: যেমন সয়া তেল, কর্ণের শ্বেতসার।
- প্রাকৃতিক জৈবপলিমার: যেমন সেলুলোজ, চিটোসান।
- গাঁজন প্রক্রিয়া: কিছু জৈব প্লাস্টিক চিনির গাঁজনের মাধ্যমে তৈরি হয়।
যদিও জৈব প্লাস্টিক পরিবেশের উপর কম প্রভাব ফেলে,তবুও বর্তমানে বিশ্বের মোট প্লাস্টিক উৎপাদনের মাত্র ২% জৈব প্লাস্টিক থেকে আসে। (লিংক)
প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিবেশগত ক্ষতি এবং সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা
পরিবেশগত ক্ষতি
বিশ্বব্যাপী যেই পরিমাণ প্লাস্টিক ব্যবহার হয় তার ৮৫% ভাগাড়ে ফেলা হয়। এছাড়াও, যত্র-তত্র ফেলে রাখা প্লাস্টিকগুলো বছরের পর বছর রয়ে যায় সেই একই জায়গায়। খালি বা পরিত্যক্ত জমির মাটিতে, পুকুর, খাল, নদী হয়ে অবশেষে সমুদ্রে ভেসে বেড়ায় এই সকল প্লাস্টিক যুগের পর যুগ। যা পচে না, কিন্তু যার ক্ষতিকর বিক্রিয়া চলতে থাকে, যার প্রভাব পরে প্রানী এবং উদ্ভিত জগতের উপর।
শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে। খাবার, দৈনন্দিন বাজার, শপিং, সুপারশপ, অনলাইন কেনাকাটায় প্রায় সকল পণ্যের মোড়ক হচ্ছে প্লাস্টিকের, যার ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তি সবাই প্লাস্টিকের বর্জ্য ইচ্ছে মত যত্রতত্র ফেলছে।
প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর জন্য রিসাইক্লিংয়ের ওপরই নির্ভর করার কথা বলা হলেও বাংলাদেশে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং এর প্রচলন নেই বললেই চলে, তার উপর দিনে দিনে প্লাস্টিকের উৎপাদন বাড়ছেই। ধারণা করা হচ্ছে ২০৬০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য তিনগুণ বাড়বে। ( লিংক )
এবার আসুন আমরা জেনে নেই, কিভাবে প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে –
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিষ্ট্রেশনের গবেষণায় দেখা যায়, মুদি দোকানের পণ্য ব্যবহার করা প্লাস্টিক ব্যাগ মাটিতে মিশতে সময় লাগে প্রায় ২০ বছর; চা, কফি, জুস তথা কোমল পানীয়ের প্লাস্টিক কাপের ক্ষেত্রে সময় লাগে ৫০ বছর; অন্যদিকে ডায়াপার ও প্লাস্টিক বোতল অপচন অবস্থায় প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকে প্রায় ৪৫০ বছর।
সূত্রঃ যুগান্তর
- এই সকল প্লাস্টিক বর্জ্য সামুদ্রিক ও বন্যপ্রাণীসহ তাদের আবাসস্থল, জল, স্থল এবং সর্বপোরি মানবগোষ্ঠীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। হিসাব মতে, গত ৫০ বছরে পৃথিবীতে মাথাপিছু এক টনের বেশি প্লাস্টিক পণ্য উৎপন্ন করা হয়েছে। এই সকল অপচনশীল প্লাস্টিকের ১০% আগুনে পুড়িয়ে ডাম্পিং করা হলেও অবশিষ্ট ৯০% পরিবেশে রয়ে গিয়ে বিপন্ন করছে জনজীবন।
- আপনি জানেন কি, অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে ৪০০ বছর থেকে প্রায় ১০০০ বছর পর্যন্ত টিকতে পারে? প্লাস্টিক দূষণকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় – মাইক্রো, ম্যাক্রো ও মেসো। খুব সুক্ষ কণার এই উপাদানগুলো দ্রুত পরিবেশের সঙ্গে মিশে দূষণের সৃষ্টি করে।
- প্রাণীর খাদ্যচক্রের মাধ্যমে প্লাস্টিক মাইক্রো কণা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।
- ক্লোরিনযুক্ত প্লাস্টিক ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ পানির সঙ্গে পানিচক্রের মাধ্যমে আমাদের খাদ্যে প্রবেশ করছে। এসকল ন্যানো প্লাস্টিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষের ভেতর অবস্থিত ডিএনএ ও আরএনএ অণুর মধ্যে মিউটেশন করে ক্যানসার এর কারন হয়।
- পরিসংখ্যান মতে, সমুদ্রে প্রতি বছর ১৪ মিলিয়নের বেশি প্লাস্টিক জমা হচ্ছে! সামুদ্রিক প্রাণী যেমন সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, তিমি ও সামুদ্রিক পাখির খাদ্য ও জীবন প্রণালিতে প্লাস্টিকের এমন ভয়ানক দূষণ মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। প্রায় প্রতি ৩টি মাছের মধ্যে ১টির পেটে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ১০ লাখ সামুদ্রিক পাখি এবং ১ লাখ সামুদ্রিক প্রাণী প্রতিবছর মারা যাচ্ছে। গত
কয়েক বছরে অনেকগুলো সমুদ্রের তিমি মাছের মৃত্যুর কারন খুঁজতে গিয়ে তাদের পাকস্থলীতে প্লাস্টিক খুঁজে পাওয়া গেছে। এছাড়াও, সমুদ্রের প্রাণী জগতের খাদ্যে দূষণ, পাকস্থলীতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি ও দূষণের ফলে বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক সামুদ্রিক প্রানী।
- ক্ষতিকর প্লাস্টিক কণা মানুষ ও অন্য জীবের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে।
- প্লাস্টিক উৎপাদনের সময় জীবাশ্ম জালানি, অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস নিষ্কাশনের ফলে বায়ু ও পানি দূষণ হয় এবং এর ফলে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাসের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের কারন হয়ে দাড়ায়।
- আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন কেন্দ্রের দেয়া তথ্যমতে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে প্রায় ৯৯ শতাংশ প্লাস্টিক আসে। হিসাব অনুযায়ী, গত ২০২০ সালেই বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক শিল্প থেকে ১.৮ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সমপরিমাণ গ্যাস বের হয়েছে। ধারণা করা হয়, যা কি না ৩৮০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ও প্যাকেটজাতকরণের সমান।( সূত্র )
মোট কথা, জলবায়ু দূষণের পাশাপাশি, প্রাকৃতিক ও জীব বৈচিত্র্যের জন্য প্লাস্টিক এমন এক হুমকি যা পুরো পৃথিবীকে দূষিত করতে যথেস্ট। ইতিমধ্যে প্লাস্টিকের প্রভাবে পৃথিবীর জলবায়ু এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের উপর যে পরিমাণ বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে তা সারা বিশ্বের জন্যই হুমকি এবং আগামীর প্রজন্মের কতা ভাবলে বেশ দুশ্চিন্তার।
কিন্তু এই অবস্থার দ্রুত উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ে প্রতিবাদ, আন্দোলন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
প্লাস্টিকের প্রভাব কমাতে আমাদের করণীয়
-
স্কুলে – কলেজের পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে
প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কম বেশি সবারই জানা আছে, কিন্তু এর বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব দ্রব্যের ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে, অভ্যস্ত করতে হবে। আগামীর প্রজন্মকে পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখা ও জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে, যার অংশ হিসেবে সচেতনতা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
-
মিডিয়া ক্যাম্পেইন
সকল মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করা জরুরি। এই ধরণের প্রচারাভিযানগুলি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায় এবং মানুষের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় অভ্যাস পরিবর্তনের স্পৃহা জাগায়।
-
আইনের কঠোর বাস্তবায়ন
আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবি। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও তার যথাযথ প্রয়োগ আমরা দেখি নি কেবল মাত্র আইনের শক্ত প্রয়োগের অভাবে।
-
বিকল্প পণ্য ব্যবহার
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যের পরিবর্তে ব্যবহার করুন কাপড়ের ব্যাগ, কাঁচের বোতল, পরিবেশবান্ধব সুপারি পাতার প্লেট-বাটি এবং মাটির কাপ সহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব পণ্য।
-
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
সুপারশপ এবং বাজারগুলো চাইলে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড়ের বা পাটজাত ব্যাগ, প্লাস্টিকের পরিবর্তে বিকল্প পণ্য হিসেবে ক্রেতাদের দিতে পারে। কিন্তু এই ব্যাপারে তাদের অনাগ্রহের কারন গুলো খুব পরিস্কার। প্লাস্টিকের পণ্য সহজলভ্য ও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, অন্য দিকে পরিবেশ বান্ধব পণ্য যেহেতু উৎপাদন কম হয় এবং বার বার ব্যবহার করা যায় তাই এতে একটি মহলের ব্যবসায়িক লোকসানের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পরিবেশবান্ধব পণ্য: প্লাস্টিকের সেরা বিকল্প সমাধান
- কাপড়ের ব্যাগঃ সাধারণত কটন, জুট বা অন্যান্য প্রাকৃতিক ফাইবার থেকে তৈরি হয় এই ধরণের ব্যাগগুলো। কাঁচাবাজার ও দৈনন্দিন জিনিসপথ বহন করতে এই ধরণের ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। যা একই সাথে পরিবেশের জন্য কোন ক্ষতি বয়ে আনছে না, উল্টো পুনরায় ব্যবহার করার ফলে আবর্জনার পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।
- পাটের ব্যাগঃ পাটের আঁশ থেকে তৈরি এই ধরনের ব্যাগগুলো বেশ শক্তিশালী, টেকসই এবং সম্পূর্ণভাবে বায়োডিগ্রেডেবল। শৈল্পিক দিক থেকেও এই ব্যাগগুলো হাতে বেশ দারুণ লাগে দেখতে, অভিজাত ও রুচিসম্পন্ন।
- কাঁচের বা স্টেইনলেস স্টিলের বোতলঃ পানির পাত্র হিসেবে বিভিন্ন অফিস, রেস্টুরেন্ট ও বাসায় প্লাস্টিকের জগ বা বোতনের পরিবর্তে কাঁচ বা স্টেইনলেস স্টিলে পানি রাখা যেমন স্বাস্থ্য সম্মত, তেমনি পরিবেশের জন্য ঝুঁকিহীন। এছাড়াও গরমকালে পানি ঠান্ডা রাখার জন্য মাটির পাত্র দারুণ কার্যকরি।
- কাগজের ব্যাগঃ কাগজের ব্যাগ পরিবেশবান্ধব তাই বর্জ্য হিসেবে ফেলে দিলেও তা মাটির সাথে পচে মিশে যাবে বা পানিতে ভেসে মিলিয়ে যাবে। পরিবেশের জন্য কোন রুপ বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে না বিধায় কাগজের ব্যাগ ব্যবহার পরিবেশের জন্য উপযুক্ত।
- জৈব পদার্থ থেকে তৈরি ব্যাগঃ উদ্ভিজ্জ উপাদান যেমন – ভুট্টার স্টার্চ বা আলুর স্টার্চ থেকে তৈরি, সুপারি পাতার প্লেট-বাটি সহজেই মাটিতে পচে মিশে আয় এবং মাটির উর্বরতায় কোন ক্ষতি করে না বিদায় পরিবেশের জন্য নিরাপদ।
- সিলিকন ব্যাগঃ সিলিকন ব্যাগগুলি বার বার ব্যবহার করা যায়, যা ওয়ান-টাইম প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কার্যকর। এই ব্যাগগুলি খাদ্য গ্রেড সিলিকন থেকে তৈরি হয়, যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ, কিন্তু বায়োডিগ্রেডেবল নয় অর্থাৎ সহজে পচনশীল নয় তাই পরিবেশে লম্বা সময়ের জন্য থেকে যায়, ফলে ব্যবহারের পর সঠিকভাবে নষ্ট করা প্রয়োজন।